আরিফুল ইসলাম জিমন, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) থেকে: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বাড়িতে প্রবেশ করে দোলেনা বেগম নামের এক গৃহবধূর হাত-পা বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ১৫ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে দূর্বৃত্তরা। ঘটনাটি সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক রাত ৮ টার সময় পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের লালমাটি শ্যামপুর এলাকার রফিজ উদ্দিনের ছোট ছেলে আব্দুর রাজ্জাকের বসত বাড়িতে ঘটেছে। তিনি উপজেলার সদর ওসমানপুর বাজারের একজন মুদি ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে।
জানা যায়, আব্দুর রাজ্জাক তার স্ত্রী দোলেনা বেগমকে নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতো। রাজ্জাক প্রতিদিনের ন্যায় ওসমানপুরে তার দোকানে গিয়ে দোকানদারি করছিলো। এমতাবস্থায় ওইদিন আনুমানিক রাত ৮ টার সময় তার বাড়িতে কালো পোশাকধারী আপাদমস্তক ৪ জন মানুষ দেশিও অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে। এ সময় বাড়িতে রাজ্জাকের স্ত্রী ছাড়া আর কেউ ছিল না। কেচি গেট ছাড়া ঘরের দরজা না থাকায় দুর্বৃত্তরা ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে রাজ্জাকের স্ত্রীর মুখ চেপে ধরে প্রথমে মুখের ভেতর কাপড় গুঁজে দেয় এরপর ওড়না দিয়ে শক্তকরে হাত-পা বেঁধে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জমি কেনার জন্য ঘরে ওয়ারড্রবের ড্রয়ারে মজুদ রাখা নগদ ১৫ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী দোলেনা বেগম জানান, ঘটনার সময় বিদ্যুৎ ছিলো না। আমার পেটে ব্যাথা হওয়ায় ঘরে শুয়ে ছিলাম। এ সময় বাড়িতে মানুষ প্রবেশের শব্দ পেয়ে উঠে দরজার কাছে যেতেই অন্ধকারের মধ্যে কয়েকজন আমার মুখ চেপে ধরে। তখন আর কথা বলতে পারছিলাম না। এরপর ঘরে থাকা আমার ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে শক্তকরে হাত-পা বেঁধে ফেলে। আমি ৪ জন লোককে দেখেছি তবে তাদের মুখ সহ সারা শরীর কালো কাপড় দিয়ে ঢাকা থাকায় কাউকে চিনতে পারিনি। ঘটনার প্রায় ত্রিশ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর আমার স্বামীর বড়ো ভায়ের স্ত্রী ছেতারা বেগম বাড়িতে আমার খোঁজ করতে এসে আমার এ অবস্থা দেখে পরিবারের সবাইকে খবর দেয়।
বাড়ির মালিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি জমি ক্রয়ের জন্য এনজিও (ব্যাংক) কতৃক ১০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছি। গতকাল ২ টা গরু বিক্রি করেছি এবং ব্যবসার নগদ অর্থ সহ মোট ১৫ লক্ষ টাকা প্রস্তুত করে রেখেছিলাম বুধবার ঘোড়াঘাট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে বায়নকৃত জমির দলিল হওয়ার কথা ছিল। ঘটনারদিন ব্যবসার কাজে দোকানে ছিলাম। এ ঘটনার ঘন্টাখানেক পর বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে বাসায় এসে দেখি আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। এত টাকা ঋণ আমি শোধ করবো কিভাবে!
এ ব্যাপারে ঘোড়াঘাট-হাকিমপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম, ঘোড়াঘাট থানার ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘোড়াঘাট থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভুক্তভোগী ওই পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। অপরাধ যেই করুক কোন ছাড় নেই। তদন্ত-সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।